




সুশান্তর মৃ-ত্যুর পর থেকেই পরিচালকের সারি থেকে একটি নাম সব সময় তালিকার শীর্ষে রয়েছেন, তিনি আর কেউ না মহেশ ভাট। সুশান্ত এর মৃ-ত্যুর পরে এই পরিচালকের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব আছে বলেই মনে করছেন পুলিশ থেকে নেটিজেন প্রত্যেকে।জেনে নেওয়া যাক এই বিখ্যাত পরিচালক এর জীবন কথা। তিনি ছোটবেলা থেকেই দেখতেন তাদের বাড়িতে যখনই তার বাবা আসতেন, তখনই তিনি সর্বক্ষণ জুতো পড়ে থাকতেন। মা এবং তাদের দুই ভাইয়ের সঙ্গে বেশিক্ষণ থাকতে না তার বাবা।





করতে আসার পরেই যেন বাড়ি ফেরার তাড়া থাকতো তার। না সবসময় বলতেন যে বাবার অন্য আরেকটি সংসার আছে।তখন এই কথার অর্থ বোধগম্য হত না মহেশের। কৈশোরে পৌঁছে তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, তিনি তার বাবা-মায়ের লাভ চাইল্ড। বাবা মায়ের মধ্যে কোন বৈবাহিক সম্পর্ক ছিল না। নিজেকে কখনো লাভ চাইলে বলতে কুণ্ঠাবোধ করেননি মহেশ ভাট।





তার বাবা নানাভাই ভট্ট ছিলেন হিন্দি সিনেমার নামে পরিচালক এবং প্রযোজক। তিনি তার স্ত্রী হেমলতা এবং সন্তানদের নিয়ে থাকতেন।কিন্তু নানাভাই কোনদিনই শিরিন মাহমুদ আলীর সঙ্গে তার সম্পর্ক অস্বীকার করেননি। শিরীন কে নিজের স্ত্রী হিসেবে তিনি কখনো গ্রহণ করেননি, কিন্তু তার এবং তাদের সন্তানদের প্রতি কর্তব্য পালন করে গেছেন বরাবর।মহেশ ভাটের মা সবসময় বলতেন,” তোমাকে তোমার বাবার পাশে দাঁড়াতে হবে”।





স্কুল জীবন থেকেই ছোটখাটো কাজ করতে শুরু করেছিলেন মহেশ। জীবনে সংগ্রামের পাশাপাশি এসেছিল প্রেম।লোরেন ব্রাইট নামে এক কিশোরী পড়তেন মুম্বাইয়ের এক অনাথ আশ্রমের স্কুলে। ডন বসকো স্কুলে পড়াকালীন পাঁচিল ডিঙিয়ে প্রেওশি লোরেনের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন স্কুলপড়ুয়া মহেশ।তাদের প্রেম একদিন ধরা পড়ার পর অনাথ আশ্রমের স্কুল থেকে নাম কাটা গেল লোরেনের। মহেশের চেষ্টায় অন্য আরেকটি সমস্যা থেকে পড়াশুনা শেষ করে টাইপিস্টের চাকরি পেলেন লরেন।ম





ভাট বিজ্ঞাপন তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন ততদিনে, বছর কুড়ি পর হতেই তিনি বিয়ে করে ফেলেন তার প্রেমিকাকে।বিয়ের পর লোরেন নাম পাল্টে হয়ে গেলেন কিরণ ভট্ট। মহেশ প্রথম ২১ বছর বয়সে পিতৃত্বের স্বাদ পেলেন। পূজা জন্ম নেবার পর বিজ্ঞাপন তৈরি উপার্জনে সংসার তাদের আর চলছিল না। মহেশ পরিচালক রাজকুমারের কাছে গিয়ে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করলেন। প্রথমদিকে ছবিগুলি ব্যর্থ হয়ে গেল।সংসারেও তিক্ততা বাড়তে বাড়তে শ স্ত্রী র সাথে দূরত্ব বেড়ে গেল পারভিন ববির আগমনে।





মানসিক অস্থিরতায় শিকার পারভীন এবং মহেশের প্রেম গোপন ছিল না কারোর কাছে। কিন্তু এর ফলে পরিনাম হয়ে গেল আরও ভ’য়ঙ্কর। পারভিন আরো বেশি মানসিক রোগে ডুবে যান এবং মহেশ মাদকের দ্বারা পরিস্থিতি থেকে বেরোনোর নিষ্কৃতি খুঁজতেন। হাজার ১৯৭৮ সালের মহেশের বেশ পরপর কিছু সিনেমা রিলিজের পর বলিউডে নিজের জায়গা মজবুত করেছিলেন মহেশ।তার পরিচালিত ছবি” অর্থ” যেন শুধু ছবি নয় তার জীবনের একাংশ। নিজের জীবন তিনি তুলে ধরেছিলেন হাজার ১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া আশিকি সিনেমা দিয়ে। অর্থ উপার্জনের সফল হবার পর প্রথম স্ত্রী কিরনের কাছে ফিরে গিয়েছিলেন মহেশ।





কয়েক বছর সংসার করার পর,ছেলে রাহুলের জন্মের পর ফের অভিনেত্রী সোনি রাজদানের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।তার প্রথম স্ত্রী কিরণ এর দুই সন্তান পূজা এবং রাহুল দুজনেই অভিনেতা, দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানরা আলিয়া বলিউডের প্রথম সারির নায়িকা।তিনি তার প্রত্যেক ছেলেমেয়েকে বলিউডে প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টার কমতি রাখেননি।মহেশের মাসতুতো ভাইয়ের ছেলে ইমরান হাশমি কে এবং নানাভাই ভট্ট এর সূত্রে মহিত সুরি কে বলিউড মজবুত করতে সাহায্য করেছিলেন।





মহিষের হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিত হয়েছিলেন আমির খান সঞ্জয় দত্ত কুমার গৌরবের মতো তারকা পুত্র।
তা দীর্ঘ পরিচালক জীবনে উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে ঠিকানা দিল হে কে মানতা নেহি, হাম হে রাহি পেয়ার কে, পাপা কেহেতে হে, ড্যাডি, গ্যাং’স্টার, কলিযুগ, মার্ডার এর মত আরো অনেক বিখ্যাত ছবি। সর্বদাই বিতর্কে শিরোনামে থাকা পছন্দ করেন তিনি।বহু বছর আগে নিজের মেয়ে পূজার সাথে লিপ লক কিস, বা হালে রিহা চক্রবর্তীর সঙ্গে ঘ’নিষ্ঠ পুরুষ হিসেবে তার নাম উঠে আসা কোন কিছুই তার গতি রুদ্ধ করতে পারেনি। ব্যক্তিগত জীবন এবং ছবি দুই দিকে গিয়েছেন তা নিজের শর্তে।





ছোটবেলায় যে মাতা রিপোর্ট কার্ডে কাঁপা কাঁপা হাতে সই করতে শুধুমাত্র অস্তিত্ব সং’কটের জন্য। তাকে তিনি কিছুটা হলেও আইনি পরিচিতি দিতে পেরেছিলেন।তার মায়ের মৃ-ত্যুর সময় দ্বিতীয় নারীর কাছে এসে পৌঁছাতে পারেননি মহেশের বাবা নানাভাই ভট্ট, এই আক্ষেপ সারা জীবন থেকে যাবে মহেশের মনে। মা ব্যতীত নিজের জীবনের কান্ডারী হিসেবে তিনি দার্শনিক ইউসি কৃষ্ণমূর্তিকে মনে করেন। ভগবান কৃষ্ণ কে তিনি তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিসেবে মনে করেন।




