




প্রতিবন্ধী শব্দটা অভিশাপ হলেও কোন কোন মায়ের ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অসতর্কতার কারণেই জন্ম নেয় প্রতিবন্ধী শিশু। বয়সের অনুপাতে শিশুর দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ব্যাহত হলে শিশু শারীরিকভাবে হয় স্বল্প বুদ্ধির। এদেরকে ’প্রতিবন্ধী শিশু’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে না বলে এ সব শিশু নিজেদের ব্যাপারে থাকে উদাসীন,





পিছিয়ে পড়ে সমবয়সী শিশুদের থেকে। প্রতিবন্ধী শিশুরা অনেক সময় পরিবারের বোঝা হয়ে পড়ে। কিন্তু প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মাবার পিছনে নিজেদের কোনও হাত বা ইচ্ছা থাকে না। অথচ এরা সমাজ ও জাতির জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অবশ্য সচেতনতার মাধ্যমে রুখে দেয়া যায় প্রতিবন্ধী শিশুর আগমন, তেমনি প্রতিবন্ধী শিশুকেও সফল জীবন যাপনে সাহায্য করা যায়। শিশুর প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ:





গর্ভাবস্থায় মা যদি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খায়, তাহলেও অনেক ওষুধের কারণে ভ্রূণের অঙ্গ সৃষ্টিতে বাধার সৃষ্টি হতে পারে, ফলে শিশু প্রতিবন্ধী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মায়ের বয়স যদি কম হয় তাহলেও শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে। আবার বেশি বয়স করে অর্থাত্ ৩৫ বছরের পর কোনো মহিলা মা হলে তার প্রতিবন্ধী শিশু জন্মগ্রহণ করার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থায় যদি মা ঘনঘন খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত হয় তবে শিশুর অক্সিজেনের অভাব ঘটে ও তার মস্তিষ্কের ক্ষতি করে, ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় নিকট আত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হয়।





সে ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিশু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। মায়ের শরীরে তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রবেশ হলে অথবা বাবা মায়ের রক্তে আরএইচ(Rh) উপাদান থাকলে প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম হবে। আবার আমাদের মতো দেশে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রীর অভাব এবং শিশু জন্মের সময় বেশি হলে বা জন্মের সময় মস্তিষ্কে কোনো আঘাত পেলেও শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে। নবজাতক যদি জন্ডিসে আক্রান্ত হয়, শৈশবে যদি হঠাত্ করে পড়ে যায়, পরিবেশে বিষাক্ত পদার্থ থাকলে ও পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি হলে শিশু প্রতিবন্ধী হয়।





একটু সচেতন হলে, শিশুর জন্মের পরই যদি প্রতিবন্ধিতা শনাক্ত করা যায় তবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কিছু প্রতিবন্ধিতা থেকে শিশুকে রক্ষা করা সম্ভব।প্রতিবন্ধিতা রোধ করতে হলে গর্ভকালীন সময় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। ওষুধ গ্রহণে সতর্কতা থাকতে হবে। প্রতিষেধক টিকা গ্রহণ করতে হবে এবং জন্মের পর শিশুদের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে শিশুকে লালন-পালন করতে হবে। বেশি বয়সে সন্তান ধারণ রোধ করতে হবে।




