




গুপ্তযুগে জ্যোতির্বিদ আচার্য বরাহমিহির যে শাস্ত্র রচনা করেছিলেন, তা নিছক গ্রহ-তারকার হিসেব-নিকেশ ছিল না, একথা জনশ্রুতি থেকে জানা যায়। সত্যি বলতে, সেই যুগে গ্রহ-নক্ষত্রের চর্চাকে মানবজীবনের সাপেক্ষেই দেখা হত। নবজাতকের কোষ্ঠী নির্ণয় ছিল আবশ্যকর্তব্য। আচার্য বরাহমিহিরও জন্মপত্রিকার উপরে বিপুল গুরুত্ব আরোপ করে গিয়েছেন। তাঁর রচিত ‘বরাহ সংহিতা’ তাই জ্যোতির্বিদ্যার কোনও মামুলি গ্রন্থমাত্র নয়। এতে লিখিত রয়েছে শুভাশুভ বিষয়ে বিস্তারিত সন্দর্ভ।





বরাহমিহিরের রচনা থেকে ধারণা পাওয়া যায় বহু প্রকার ইঙ্গিত সম্পর্কে। তাদের কোনওটি শুভ, কোনওটি ঘোর অশুভ। যুগ যুগ ধরে এই কহনগুলি ভারতীয় গণমানসে বিধৃত রয়েছে। এর সত্যাসত্য নিরূপণ করা দুরূহ। কেউ যদি এগুলিকে কিংবদন্তি হিসেবে দেখেন, তো একটা বড় অংশের মানুষ এগুলিকে ধ্রুব হিসেবে গণ্য করেন। বরাহের রচনায় যে ইঙ্গিতগুলির কথা বলা হয়েছে, তার কোনওটি মাটিপৃথিবীর, কোনওটি আকাশের, আবার কোনওটি প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে জড়িত।





দেখা যাক বরাহ-কথিত কয়েকটি অশুভ ইঙ্গিতকে।





• বরাহের কথন অনুযায়ী, দুধ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। তাঁর মতে, প্রত্যূষে দুধ দেখতে পাওয়া শুভ। ফুটন্ত দুধ উথলে ওঠার দৃশ্য শুভ। তা পারিবারিক ধনবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়। কিন্তু কেউ ইচ্ছে করে দুধ উথলে দিলে তা অশুভ। শিশুদের দুধ পান করার অব্যবহিত পরে বড়ি থেকে বেরতে দিতে বরাহ নিষেধ করেছেন। স্বপ্নে দুধের দর্শন বরাহের মতে, নিশ্চিত অশুভ।





জ্যোতিষদের মতে, যদি কোনও ঠান্ডা দুধের পাত্র পড়ে যায়, তবে এটি কোনও ভবিষ্যতের অশুভ ঘটনা ঘটতে পারে এমন কোনও ইঙ্গিত দেয়। অতএব, যখনই পাত্র থেকে ঠান্ডা দুধ পড়বে তখন এটিকে উপেক্ষা করবেন না। কারণ এটি ভবিষ্যতে ঘটে যাওয়া অশুভ ঘটনাটি নির্দেশ করে। তাই মনে রাখবেন যে ভুল করেও যেন ঠান্ডা দুধটি পাত্র থেকে না পড়ে।





জ্যোতিষদের মতে, দুধ যদি গ্যাসের উপর ফোটে তবে এটি একটি শুভ লক্ষণ। হ্যাঁ, যদি কখনও ফুটন্ত দুধ পাত্রের বাইরে পড়ে তবে বুঝতে হবে শিগগিরই আপনার জীবনে কিছু দুর্দান্ত সুখ হতে চলেছে। তবে আপনার মনে রাখা উচিত যে দুধটি পাত্র থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে বের হওয়া উচিত নয়, অজান্তেই এটি ঘটেছিল তবেই এটি শুভ লক্ষণ হিসাবে বিবেচিত হয়।




