প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে মনের জোরেই হুইল চেয়ারে বসে পাড়ি দিচ্ছেন অক্সফোর্ডে ভারতের এই বিজয়িনী

দিল্লী ইউনিভার্সিটির মহিলা শ্রী রাম কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠা দেবেশ্বর এবার যাবেন অক্সফোর্ডে। সংবাদ সূত্রের খবর দেবেশ্বর হলেন প্রথম হুইলচেয়ারে বসে থাকা এমন একজন ভারতীয় মহিলা, যাকে আইভি লীগ কলেজে ভর্তি নেওয়া হয়েছে।হোশিয়ারপুরের প্রতিষ্ঠা দেবেশ্বর যখনই শিক্ষাবিদদের কাছে আসতেন তখন তাদের আলোচনার দিকেই মনোনিবেশ করতেন তিনি। গত ১৫ ই জুন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসার রেজার শংসাপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের সঙ্গে শেয়ার করে নেন তিনি।

টুইটারে তার পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আমি আনন্দিত হয়ে শেয়ার করতে পেরেছি যে আমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক পলিসিতে মাস্টার্স নিচ্ছি! আইসিইউ থেকে যেখানে আমি আমার জীবনের জন্য লড়াই করেছি এখন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী অক্সফোর্ডে পাড়ি দেওয়া প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে। আপনাদের সমর্থনের জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠার জীবনের গল্পটি যেকোনো অসহায় প্রতিবন্ধী মানুষকে সাহায্য করবে। প্রতিবন্ধীদের কাছে তার জীবনের গল্প অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। জীবন হোক বা শারীরিক কোনো প্রতিবন্ধকতা এ লক্ষ্য অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না, তা প্রমাণ করলেন প্রতিষ্ঠা।লক্ষ্য এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষা যেকোনো জীবন যুদ্ধে জয়লাভের জন্য যথেষ্ট উপযোগী।

হোশিয়ারপুর থেকে চণ্ডীগড় যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল প্রতিষ্ঠা। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। এই দুর্ঘটনায় তার স্পাইনাল কর্ডের কিছুটা অংশ গুরুতরভাবে জখম হয়। বুকের পর থেকে বাকি অংশ প্যারালাইজড হয়ে যায় তার। আইসিইউতে ভর্তি করার পর কোন রকমে বেঁচে ফেরেন তিনি।

তারপরেই তিনি উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকেন। তিনি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ঘরে বসে ছিলেন এবং তিনি যখন স্নাতক হন, তখন বাড়ির চার দেওয়ালের গণ্ডি থেকে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মা-বাবার কাছে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন যাতে তাকে মহিলা শ্রী রাম কলেজে যেতে দিতে রাজি হয়। তবে এক্ষেত্রে বাধ সেধেছিল পরিবার-পরিজনসহ আত্মীয়স্বজনেরা। দিল্লির মতো বড় শহরের না পাঠিয়ে প্রতিষ্ঠাকে স্থানীয় কোন কলেজে ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তারা।

জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার জন্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংও তাকে অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বড়োসড়ো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের জায়গা পাকাপাকিভাবে করে নিয়ে ভারতে ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠা। তিনি আরো বলেন, দেশের জ্ঞানার্জনের পক্ষে দেশের বিভিন্ন দক্ষ ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে তাঁর জ্ঞানকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করছেন তিনি।

Related Posts

দুধের ব্যবসায় দুধের ঘাটতি দেখেও চাকরি ছেড়ে নিজেই দুধের ব্যবসা শুরু করে আজ যেভাবে তিনি 200 কোটি টাকার বেশি মূল্যের দুধের ব্যবসা দাঁড় করালেন

আমাদের দেশ প্রতিদিন উন্নতি করে চলেছে। এখন আমাদের দেশে এক্সপ্রেসওয়ে, হাইওয়ে, বড়ো বড়ো বিল্ডিং প্রভৃতি আছে। এখন আমাদের দেশের যুবসমাজ সরকারি চাকরি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতি ঝোঁক দেখাচ্ছে।…

10 কিমি পায়ে হেঁটে এই IAS অফিসার সবজি কিনতে যান, এমনভাবে জীবনযাত্রা পালন করেন দেখে মনে হবে তিনি একজন সবজি বিক্রেতা

আমাদের দেশে আইএএস ও আইপিএস অফিসারদের সরকার থেকে বেশ ভালোভাবেই দেখাশোনা করা হয়। তাদের সবরকম সুখ-সুবিধার খেয়াল সরকার রাখেন। ফলে সাধারণ মানুষেরা কোনদিন ভাবতেই পারেননি যে কোন…

পড়তে বসে রেগে গিয়ে বাবাকে মেয়ের প্রশ্ন “তুমি মাকে বিয়ে” করলে কেন? মা তোমার থেকে অন্য ভালো বর পেতো, ভিডিও ঝরের গতিতে ভাইরাল

গত দুই মাসের মধ্যে আমরা অনেক কিছুই সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করতে পেরেছি। কখনো কেউ ভালো গান গেয়ে, কেউবা ভালো নাচ করে মনোরঞ্জন করেছেন সকলের।…

গবেষণায় দেখা গেছে অল্পবয়সী দম্পতিরাই বিয়ের পর বেশি পরিমাণে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে, কারণ জানলে চমকে যাবেন

বিয়ে করার মনোভাব সাধারণত দুই রকমের হয়। এক হয় সদর্থক, অর্থাৎ কেউ বিয়ে করতে চান।আর এক হয় নঙর্থক অর্থাৎ কেউ বিয়ে করতে চান না। হ্যাঁ তবে বিয়ে…

পা অচল, বয়সের বাধ্যক্য ঘিরে ধরেছে, তবু নৌকা নিয়ে নদী থেকে বজ্র পদার্থ নিকেশ করে পরিবেশের স্বচ্ছতাকে বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর রাজাপ্পন

ভারতবর্ষের খুব কম মানুষই আছেন যারা স্বচ্ছ ভারত অভিযানের নিজেদের শামিল করে ভারতবর্ষকে পরিষ্কার রাখতে চান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী যতই স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু করুক না কেন, ভারতবর্ষের…

হাতজোড় করে জল চাইছে তৃষ্ণার্ত কাঠবিড়ালি, ভিডিও দেখলে আপনি আশ্চর্য হবেন ভাইরাল সেই ভিডিও

“কাঠবিড়ালি কাঠবিড়ালি পেয়ারা তুমি খাও?”না পেয়ারা নয় বরং তৃষ্ণার্ত অবস্থায় হাতজোড় করে জল চাইছে কাঠবিড়ালি। সারা ভারতবর্ষ জুড়ে যে করোনা আবহ চলছে, তাতে পথঘাটের চাইতে নেট দুনিয়ায়…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *