ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে, আমাদের দেশে বিদ্যাসাগরের মতো বহু ছেলেমেয়ে আছে যারা পথের ধারে রাস্তার আলোয় পড়াশোনা করে। এমনই একটি মেয়ে হলো ভারতী খান্ডেরকর। মেয়েটির বাবা পেশায় দিনমজুর। পূর্বে তাদের ঠিকানা ছিল কুঁড়েঘর। কিন্তু প্রশাসনিক কাজে সেই কুড়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়া হয়।
টাকার অভাবে পরে এই বাড়ি তৈরি করা বা অন্য কোন বাড়ি ভাড়া নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে পরিবারের অন্যান্যদের সাথে ফুটপাতেই বসে থাকতে মেয়েটি। ফুটপাতে বসেই পড়াশুনা করতো সে। দিনের বেলা রাস্তার যানজটের এবং গাড়িঘোড়ার আওয়াজে পড়া হত না তার, তাই রাত্রিবেলা নিঃশব্দে রাস্তায় বসে পড়াশোনা করতো মেয়েটি।
ইন্দোর টু নিগমের মার্কেট সংলগ্ন ফুটপাতের এই মেয়েটি এবছর মাধ্যমিকে ৬৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে।ভবিষ্যতে আই এ এস হবার ইচ্ছা আছে ভারতীর।খবরটি কানে যেতেই ইন্দোরের পুর কমিশনার প্রতিভা পাল ভারতীর রেজাল্ট দেখতে আসেন।রেজাল্ট দেখে তিনি এতটাই খুশি হন যে ভারতীকে একটি আস্ত ফ্ল্যাট তিনি উপহার করেন। যাতে ফুটপাতে তাদের আর থাকতে না হয় সেই কারণেই এই উদ্যোগ।
ফ্ল্যাট ছাড়াও একাদশ শ্রেণির কিছু বই, খাতা, পেন্সিল, পেন টেবিল-চেয়ার, জামা কাপড় এই সব কিছুর ব্যবস্থা করে দেন প্রতিভা দেবী। এছাড়া যাতে ভবিষ্যতে ভারতীর পড়াশোনা করতে কোন অসুবিধা না হয় সেই ব্যবস্থা করেন তিনি।ভারতের বাবা দশরথ খুব আনন্দিত। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভারতী সারাদিন ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করত, সাথে রান্নাতে মাকে সাহায্য করত।
পড়াশুনো করত প্রত্যেকদিন রাত জেগে। তিনি অথবা তার স্ত্রী পালা করে রাত জেগে ভারতের কাছে বসে থাকতেন।এইভাবে দিনের পর দিন কষ্ট করে পড়াশোনা করে আজ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করতে পেরেছে মেয়েটি।খবরটি সোশ্যাল-মিডিয়ায়-ভাইরাল হবার পর বহু মানুষ মেয়েটিকে আগামী দিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছে।