মিজগা শেখ এবং তার স্বামী ফায়াজ নতুন বাড়ি কেনার জন্য প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা সাশ্রয় করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা খেতে না পাওয়া অনাহারী মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিতে অকাতরে খরচ করলেন। মুম্বইয়ের এই দম্পতি জিল ইংলিশ স্কুল নামে একটি ছোট্ট স্কুল খুলেছেন অম্বুজওয়াদি অঞ্চলে।
স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের অধ্যক্ষ মিজগা শেখ কে বলেছিল যে, এই লকডাউনের সময় ফি প্রদানের সামর্থ্য তাদের নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের কথা বিবেচনা করে ওই ব্যক্তি তিন মাসের জন্য এই শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। শিক্ষার্থীদের সাথে আরও কথা বলে মিজগা জানতে পেরেছিল যে শিক্ষার্থীরা দিনে দু বেলা খেতেও পায় না। শিক্ষার্থীদের এই চরম দুর্দশার কথা বিবেচনা করে,তার স্বামী ফায়াজের সাথে তারা আশেপাশে রেশন বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই দম্পতি।
বিগত চার মাস ধরে তারা স্থানীয় অঞ্চলের রেশন বিতরণ করে যাচ্ছেন। ব্যক্তিগত সঞ্চয় বন্ধ করে দিয়ে ১৫০০ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছে তারা। নিজেদের একটি বাড়ি যাতে তৈরি করা যায় সেজন্য অর্থ সঞ্চয় করে রেখেছিলেন এই দম্পতি। এই টাকা গরিব কল্যাণে কাজে লাগালেন তারা। তাদের থেকে এমন উপযোগিতা পেয়ে সকলেই এই দম্পতিকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন।
অম্বুজওয়াদি অঞ্চলে সাধারণত বেশিরভাগ মানুষ দিনমজুর কিংবা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন হওয়ার কারণে কাজ হারিয়েছেন প্রত্যেকেই। স্কুল বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায় ক্লাস। অনলাইন ক্লাস চালু হয় অনেক জায়গায়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সংক্র’মণ রুখতে মানিয়ে নিতে হয়েছে পরিস্থিতির সঙ্গে। এই দম্পতি ও চেয়েছিল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অনলাইন ক্লাস করাতে। দারিদ্রতা এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।ছাত্র-ছাত্রীরা অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ার কারণে তার মা-বাবাদের কাছে মাত্র একটি করে ফোন ছিল। কখনো কোন কাজের সন্ধান পেলে সেই ফোন তারা সঙ্গে নিয়ে যায়। তাই অনলাইন ক্লাস করা সম্ভব নয়।
Couldn’t bring myself to swipe down after seeing this.Don’t know many people-wealthy or otherwise-who’d donate their home savings for a cause. If the @timesofindia journalist who covered this vouches for its accuracy,it’ll be my privilege to compensate the couple for their loss. https://t.co/Rn8pyv6S5l
— anand mahindra (@anandmahindra) July 24, 2020
সংবাদমাধ্যমে এই দম্পতির এমন প্রচেষ্টার খবরা খবর প্রচারিত হলে তা নজরে আসে শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রার। ওই সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিককে তিনি অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছেন এমন একটি খবর জনসমক্ষে আনার জন্য। ম’হামা’রীর কবলে সারা দেশ, তবুও এই দম্পতি নিজেদের জমানো অর্থ নির্দ্বিধায় দান করলেন ক্ষুধার্তদের দুবেলা-দুমুঠো খাওয়ানোর উদ্দেশ্যে। সকল সমাজের মানুষের জন্য এক অভিনব অনুপ্রেরণা।