মুখ্যমন্ত্রী ও প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের কড়া নির্দেশ অমান্য করে, গোঘাট এক নম্বর ব্লকের বিডিও সুরশ্রী পালকে ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ায় গত রবিবার আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পু’লিশ। এবার সেই আটজনেরই সাজার রায় কার্যকর করল আদালত। বিডিও সুরশ্রী পালকে গত রবিবার বাড়িতে ঢুকতে না দিয়ে টাকা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে হেনস্থা করে বাড়ির মালিক ও পাড়া প্রতিবেশীরা। সোমবার আরামবাগ মহকুমা আদালতের ধৃতদের তোলা হলে ২৭শে জুলাই পর্যন্ত তাদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন, পূরশূড়া ব্লকের কৃষি বিভাগের ব্লক আধিকারিক কৃষ্ণ মোহন সাহা, তার স্ত্রী আরামবাগ গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা মৌসুমী মন্ডল , প্রীতম কুন্ডু নামক একজন ফার্মাসিস্ট, কাজল মহন্ত, অর্ণব রায়, মৌসুমী যাদব, কবিতা রায় ও শুক্লা কোনার। এদের মধ্যে একমাত্র শুক্লা কোনার জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। জানা গিয়েছে ধৃত আনন্দমোহন সাহা নামক ওই ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন বিডিও সুরশ্রী পাল। গত শনিবার নিজের অফিসে দাঁড়িয়ে থেকে স্যানিটেশনের কাজ করান তিনি। ৩৬ ঘন্টা ধরে অফিস চালানোর পরে বাড়িতে ঢুকতে গেলে তখনই পাড়াপড়শিরা বাধা দেয়, আরামবাগ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাঠ পাড়ার বাসিন্দারা। অবশেষে উপযুক্ত সাজা পেলেন তারা। আরামবাগের এসডিপিও নির্মল কুমার দাস জানিয়েছেন, ” ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি আধিকারিক কে কাজে বাধা দেওয়া, হেনস্থা করা,১৪৪ ধারা অমান্য করা, ষড়যন্ত্র করে হেনস্থা ও বিপর্যয় মোকাবিলা আইন সহ অন্যান্য ধারায় অভিযুক্ত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।”
আরামবাগ পৌরসভার পৌর প্রশাসক, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জানিয়েছেন, ” যারা এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদের উজাড় করে দিয়ে কাজ করছেন তারা করোনা যোদ্ধা। অনেকেই পরিবারকে তুচ্ছ করে নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার বরদাশ্ত করা হবে না।বিডিও একজন মহিলা,তিনি নাবালিকা কন্যা সন্তান এবং স্বামীকে নিয়ে রোদে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। এবার আইন আইনের পথেই চলবে।” এ বিষয় নিয়ে ওয়াই রত্নাকর রাও বলেছেন, “গোটা ঘটনাটি বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে, আরামবাগের এসডিপিও নির্মল কুমার দাস এবং আইছি পার্থসারথি সরকার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। পুলিশ কর্মী এবং প্রশাসনের বক্তব্য, ” এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে থানা পু’লিশ আধিকারিকরা মরবে, আর এরা ঘরে বসে এসব অন্যায় করে বেড়াবে?” সুরশ্রী পাল বিষয়ে বলেছেন,” আমার আর কিছু বলার নেই যা বলার উর্দ্ধতন আধিকারিকরাই বলবেন।”, “এমন এক চরম নিন্দনীয় ঘটনার মধ্যে শিক্ষিকা, সরকারি আধিকারিক সহ নামজাদা মানুষেরা জড়িয়ে রয়েছে। সমাজের জন্য এই ঘটনা অত্যন্ত ল’জ্জাজনক।