




বলিউডের শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন, যার অভিনয় আজও মুগ্ধ গোটা দর্শককুল। একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে তা ভক্তেদের মণিকোঠায় স্মরণীয় করে রেখেছেন বিগ-বি। আজ ৩ জুন। অমিতাভ বচ্চন এবং জয়া বচ্চনের ৪৭ তম বিবাহবার্ষিকী। বয়স ৭৭। কিন্তু মনটা যেন সেই ২১ -এর তরুণ। একের পর এক ছবিতেই তার প্রমাণ মিলছে। লকডাউনের সকলেই গৃহবন্দি। আর বন্দি দশায় সময় কাটাতে পুরোনো স্মৃতির পাতায় চোখ রেখে নস্ট্যালজিয়া উস্কে দিয়েছেন অমিতাভ।





সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের বিয়ের ছবি শেয়ার করেছেন অভিনেতা। শুধু ছবিই নয়, এর পাশাপাশি বিয়ের অনেক অজানা গল্পও ফাঁস করেছেন অভিনেতা। সালটা ১৯৭৩। তখন সদ্যই মুক্তি পেয়েছে অমিতাভ-জয়া অভিনীত ছবি ‘জঞ্জির’। ছবিটি সুপারহিটও হয়েছিল। সেই সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পরের মাসেই জয়াকে বিয়ে করেন অমিতাভ। দেখে নিন ছবিটি।





৪৭ বছর আগে নিজের বিয়ের ছবি শেয়ার করে একটি মজার গল্পও বলেছেন অমিতাভ। তিনি জানিয়েছেন, ‘৪৭ বছর আগে এই দিনে আমরা ঠিক করেছিলাম ‘জঞ্জির’ বক্স অফিসে সফল হলে বন্ধুরা মিলে লন্ডন যাব। কিন্তু পরিকল্পনা ঠিক থাকলেও বাধা দেয় বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন। বাবা তখনই জানতে চেয়েছিলেন কে কে সঙ্গে যাবে? সকলের নাম শোনার পর জয়ার নাম শুনেই তিনি বলেছিলেন, আগে বিয়ে করো,তারপর যাবে, নাহলে নয়। বাবার সেই কথাই সেইদিন মেনে নিয়েছিলাম।





সাল ১৯৭১। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘গুড্ডি’ ছবির নায়ক-নায়িকা অমিতাভ বচ্চন-জয়া ভাদুড়ি। সেই প্রম দেখা। প্রথম আলাপ। জয়া তখন বলিউডের মস্ত তারকা। অমিতাভ পায়ের তলার মাটি খুঁজতে ব্যস্ত। ফলে, জয়া তাঁকে পাত্তা দেবেন এমনটা নয়। কিন্তু প্রথম দেখাতেই জয়াকে মনে ধরেছিল অমিতাভ বচ্চনের। জয়ার অন্য ছবির সেটেও তাঁকে দেখা যেতে লাগল আস্তে আস্তে। তাই নিয়ে অবশ্য অন্য নায়কেরা বিরক্ত হতেন। জয়াকে অমিতাভ সম্বন্ধে সাবধানও করেছিলেন রাজেশ খান্না। কিন্তু জয়া যেই শুনলেন, তিনি হরিবংশ রাই বচ্চনের ছেলে তখন আর নিজেকে সামলাতে পারেননি!





১৯৭৩-এ পরিচালক প্রকাশ মেহেরার ‘জঞ্জির’-এ ফের নায়ক-নায়িকা অমিত-জয়া। এ ছবি ব্লকবাস্টার হিট। এদিকে মাঝের ২টো বছরে পর্দার প্রেম ধীরে সুস্থে পাখা মেলছে বাস্তবে। আরবসাগরের ঢেউও পর্যন্ত জেনে গিয়েছিল অমিত-জয়ার প্রেমকাহিনি। এমনকি অমিতের বাবা হরিবংশ রাই বচ্চনও শুনেছিলেন ছেলের প্রেমকথা। এদিকে, ছবি হিটের আনন্দের জমাটি সেলিব্রেশন চাইছেন নতুন জুটি। তাও একান্তে। মুম্বইতে সেটা সম্ভব নয়! তাহলে? দেশ ছেড়ে লন্ডনে উড়ে যাওয়ার প্ল্যান করলেন অমিত। শুধু জয়াকে সঙ্গে নিয়ে। কিছুদিন কাটিয়ে আসবেন একান্তে। এটাই ছিলেন তাঁদের ইচ্ছে। আজকের ভাষায় যাকে বলে ছোটখাটো লিভ ইন!





সেই খবর কানে পৌঁছোলো হরিবংশ রাইয়ের। সঙ্গে সঙ্গে বাধ সাধলেন ছেলে-হবু বউমার লন্ডনে উড়ে যাওয়ার সাধে। ডেকে পাঠালেন অমিতকে। স্পষ্ট করে জানতে চাইলেন, ‘কোথায় যাচ্ছ? কাকে সঙ্গে নিয়ে?’ মাথা নীচু করে বাবাকে সত্যি জানিয়েছিলেন অমিত, জয়া আর তিনি যাচ্ছেন। আর কেউ নয়। শোনার পরেই হরিবংশ রাইয়ের হুকুম, ‘লন্ডন সেলিব্রেশন পরে। আগে বিয়ে কর। বিয়ে না করে এভাবে সেলিব্রেশন আমি মেনে নেব না!’





পরের রাতে ফ্লাইট। আগের রাতে বাবার এই হুকুম! কিন্তু এক রাতের মধ্যে বিয়ের ব্যবস্থা হয় কী করে? নিরুপায় অমিত সঙ্গে সঙ্গে ছুটলেন জয়ার বাড়ি। রাজি করালেন শ্বশুর-শাশুড়ি সতীনাথ ভাদুড়ি-ইন্দিরা ভাদুড়িকে। তাঁদের মত নিয়ে ৩ জুন, ১৯৭৩-এ রাতারাতি বিয়ে সেরেছিলেন অমিত-জয়া। সেই রাতেই উড়ে গেছিলেন ডেস্টিনেশন লন্ডনে। এই গল্প আজ, ৪৭তম বিবাহবার্ষিকীতে সোশ্যালে ফাঁস করেছেন স্বয়ং বিগ বি।




