গতবছর ও কেউ ভাবেনি যে সমস্ত স্কুল কলেজ ব’ন্ধ থাকবে গোটা বছরটাই। সরকারি এবং বেসরকারি যেকোনো স্কুল হোক না কেন পড়াশোনা তে ছেদ পড়েছে প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে। অনলাইন পড়াশোনা করিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রত্যেকবার আমার ক্ষেত্রে অনলাইনে পড়াশোনা ক’রানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলস্বরূপ ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটেছে অনেকটাই।এই সমস্যা দরিদ্র ছেলেমেয়েদের, কিভাবে তারা পড়াশোনা করবে এই নিয়ে কোন উত্তর কারো কাছেই নেই।
এই আধুনিক পড়াশুনার চাপে নিজের শেষ সম্বল, গরু বিক্রি করে দিলেন এক বাবা। এমনটাই ঘটনা ঘটেছে হিমাচল প্রদেশের জ্বালামুখী এলাকার গুমার গ্রামে। এ গ্রামের বাসিন্দা কুলদীপ কুমার বহুদিন ধরে একটি স্মার্টফোন কেনার চেষ্টা করছিলেন, তার চতুর্থ এবং দ্বিতীয় শ্রেণীর দুই সন্তানরা যাতে পড়াশোনা করতে পারে। কিন্তু বহু জায়গা ঘুরে তিনি নির্দিষ্ট অর্থ জোগাড় করতে পারেননি।
তাই অবশেষে আর কোন উপায় না পেয়ে নিজের শেষ সম্বল গরুটিকে বিক্রি করতে হয়েছে তাকে।স্থানীয় সংবাদ সংস্থাকে তিনি জানিয়েছেন,”গরু বিক্রি করার আগে আমি একাধিক ব্যক্তির থেকে এবং ব্যাংক থেকে টাকা ধার পাওয়ার আশায় ঘুরেছি। কিন্তু কেউ আমায় টাকা ধার দিতে চাইনি। আমি দুধ বিক্রি করি এবং দিনমজুরি করি। এ দুটি জায়গা থেকে আমার উপার্জন হয়। কোত্থেকে একসঙ্গে এতগু’লো টাকা আমি জোগাড় করতে পারব? তাই বাধ্য হয়ে গরুটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হয়। অন্তত আমার ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে পারবে”।
গত মার্চ মাস থেকে স্কুল বন্ধ হয়ে যাবার পর পড়াশোনা করার সুযোগ পাইনি তার সন্তানেরা। সেই কষ্ট টাই বুকে নিয়ে এতদিন ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বাবা-মা। বহু চেষ্টা করেও সফল না হয় শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে উপার্জনের সম্বল গরুটি বিক্রি করতে হল তাকে। ঘটনা জানাজানি হতেই স্থানীয় প্রশাসন এগিয়ে এসেছে তাদের পাশে। স্থানীয় বিধায়ক জানিয়েছেন যে, তিনি বিডিও এবং অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে ওই পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করবেন যাতে ওই পরিবার সমস্যা আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেন। এছাড়াও ছেলেমেয়ে গুলির জন্য পড়াশোনার কিছু খরচ দেবেন তারা।