




বলা হয়ে থাকে বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িই মেয়েদের আসল ঘর। আর শশুর শাশুড়ি বাবা মা। কিন্তু আমরা দেখে এবং শুনে এসেছি যে বহু পরিবারে বৌমাদের ওপর অকথ্য অত্যাচার করা হয়ে থাকে। অনেককে তো এই অত্যাচারের কারণে মৃত্যুর মুখেও ঢলে পড়তে হয়েছে। আবার কিছু কিছু পরিবার এমনও আছে যারা বৌমাকে নিজের মেয়ের থেকেও বেশি ভালোবাসা দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন ধারাবাহিকেও দেখা যায় শাশুড়ি বৌমার নিত্য কলহ। তবে প্রতিবারই যে শ্বশুর-শাশুড়িরই সব দোষ থাকে তা নয়।





অনেক সময় শ্বশুর-শাশুড়ির ওপর অকথ্য অত্যাচার করতে দেখা যায় বৌমাদের কেও। শাশুড়ি বৌমার সম্পর্ক টক-ঝাল-মিষ্টি মেশানো। কখনো রাগ তো পরক্ষণে ভালোবাসা। নতুন বাড়িতে পা দেওয়ার সময় একটা মেয়ের চোখে অনেক স্বপ্ন থাকে কিন্তু প্রতিদিনের বধূ নির্যাতনের কোনো না কোনো খবর তার মনে ভয়ের সৃষ্টিও করে। যদিও বর্তমানে শিক্ষিত মেয়েরা এই ধরনের নির্যাতন সহ্য করে না। তুলনামূলকভাবে বধূ নির্যাতনের হার কমলেও একেবারে লুপ্ত হয়ে যায়নি।





সমাজের যখন এমন পরিস্থিতি সেই সময় দাঁড়িয়ে আজ আপনাদের এমন এক পরিবারের কথা বলব যে পরিবারে শাশুড়িকে দেবতা জ্ঞানে পুজো করা হয়। ঝাড়খণ্ডের এই পরিবারে গীতা দেবী ছিলেন কর্তৃ, তার তিনটি বৌমা ও আটটি জা সবার মধ্যে বড় গীতা দেবী। তার বৌমা ও জায়েরা তাকে ভীষণ ভালোবাসেন ও সম্মান করেন। তিনি বরাবরই প্রত্যেককে সমানভাবে ভালোবেসে এসেছেন, কোনো কাজে বাধা দেননি তার। প্রতিটি বৌমাই উচ্চশিক্ষিত।





তারা স্বামীদেরকেও ব্যবসার কাজে সাহায্য করেন। বরাবরই গীতা দেবী তার বৌমা ও জায়েদের প্রতিটি কাজে উৎসাহ দিয়েছেন। এই 11 জনের কাছে গীতা দেবি ভগবান তুল্য। অনেকে ঠিক কথাই বলে ভালো মানুষদের ভগবান আগে ডেকে নেন। এমনই হয়েছে গীতা দেবীর সাথেও। এমন সোনার সংসার ছেড়ে 2010 সালে তিনি পরলোকগমন করেন। তার ইহলোকের মায়া ছাড়ার পরে তার বৌমা ও জায়েরা ভীষণ ভেঙে পড়েন। তার কিছু সময় পরই তারা গীতা দেবীর মূর্তি বানায়।





যে মূর্তি বর্তমানে তাদের মন্দিরে রাখা আছে। প্রতিদিনই ভগবান জ্ঞানে মূর্তি টি কে পুজো করেন তারা। এছাড়াও বছরে একবার মূর্তিটির সামনে ভজন কীর্তন করা হয়ে থাকে। গীতা দেবী চলে যাওয়ার পরেও তার পরিবার ভেঙ্গে যায় নি। আজও সবাই একসাথে মিলেমিশে আছেন এবং একই রান্নাঘরে পরিবারের সকলের জন্য খাবার তৈরি হয়। তাদের গ্রামে গীতা দেবীর পরিবারকে খুব সম্মান করা হয়। বর্তমান সময়ে এই ধরনের পরিবার সত্যি দুর্লভ কিন্তু দুষ্প্রাপ্য নয়।।




