




টোকিও অলিম্পিকে যেসব খেলোয়াড়রা ভারতের জন্য পদক জিতেছেন তাদের নিয়ে দেশবাসীর গর্ব অনেক। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে তাদের নিয়ে বিভিন্ন পোস্টও শেয়ার করছেন। কিন্তু টোকিও অলিম্পিকে যার নাম সবথেকে বেশি চর্চিত হচ্ছে তিনি হলেন নীরাজ চোপরা। নীরাজ চোপড়া ভারতের জন্য স্বর্ণ পদক জিতেছেন। কিন্তু আপনারা কি জানেন নীরাজ চোপড়া ছাড়াও আরো একজন খেলোয়াড় ছিলেন যিনি দেশের জন্য স্বর্ণ পদক জিতে ছিলেন।





কিন্তু আজ তিনি লাইমলাইট থেকে বহুদূরে। উত্তরপ্রদেশের ফতেহাবাদ ব্লকের অন্তর্গত আই নামক এক ছোট গ্রামের বাসিন্দা সরনাম সিংহ। এই নাম হয়তো আপনারা কখনো শোনেননি। কিন্তু ইনি দেশের জন্য স্বর্ণপদক জেতার কাজ করেছিলেন। প্রায় 37 বছর আগে 1984 সালে দক্ষিণ এশিয়ান খেলার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে জ্যাভলিন ছোরাতে স্বর্ণ পদক জিতে ছিলেন সরনাম সিংহ।





1982 সালে এশিয়ান খেলার জন্য খেলোয়াড়দের ট্রায়েল শুরু হয়। সেই সময় জ্যাভলিন ছোরাতে চতুর্থ স্থান পান। কিন্তু ট্রেনিং এর সময় তার হাতে চোট লাগায় ছয় মাস তিনি আর প্র্যাকটিস করতে পারেননি। এরপরে 1984 সালে নেপালে এশিয়ান খেলার আয়োজন হয়। সেখানে জ্যাভলিন থ্রো তে তিনি স্বর্ণ পদক জেতেন। কিন্তু সরনাম সিংহ সেখানেই থেমে থাকতে চান নি। তাই তিনি আরো অন্যান্য খেলায় অংশগ্রহণ করতে থাকেন।





1985 সালে সরনাম সিংহ গুরুজিৎ সিংহের 72.74 মিটার দূরের জ্যাভলিন ছোরাতে যে রেকর্ড ছিল তা ভেঙে দেন এবং নতুন রেকর্ড করেন 78.38 মিটার দূরে জ্যাভলিন ছোরার। সরনাম সিংহ তার যৌবন কালে খেলার দুনিয়ায় দেশের নাম উজ্জল করলেও এখনো পর্যন্ত তিনি এক হাজার টাকারও পুরস্কার পাননি। 1985 সালে নতুন রাষ্ট্রীয় রেকর্ড তৈরি করায় উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছ থেকে 1000 টাকার পুরস্কার পাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু সেই পুরস্কার তিনি আজও পাননি।





কিন্তু এরপরেও তার সরকারের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। তিনি স্কুলে মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রদের জ্যাভলিন ছোরার প্রশিক্ষণ দিতেন। তিনি চাইছিলেন তার গ্রামের প্রতিটি বাচ্চা যেন জ্যাভলিন থ্রো তে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারে। কিন্তু কিছু অশান্তির কারণে তাকে গ্রাম ছেড়ে দিতে হয়। তার মতে ভারতের প্রতিটি গ্রামে এমন অনেক বাচ্চা আছে যারা অলিম্পিকে বিভিন্ন খেলায় দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারে। সরকারের প্রয়োজন এই ধরনের বাচ্চাদের খুঁজে আনার এবং তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার।




