




বহুদিনের কঠোর পরিশ্রমের ফলাফলে সাফল্যের চূড়ায়,কৃষকের কন্যা ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয়সমস্ত প্রতিকূলতাকে পরাজিত করে অবশেষে জয়ী কেরালার পিরভমের একটি ছোট্ট গ্রামের কৃষকের মেয়ে। আর্থিক দিক থেকে পরিবারটি ছিল একেবারেই অসচ্ছল। মেয়েকে মানুষ করার মতন এবং নিজের পরিবারের দেখভাল করার মতো অর্থ কৃষকের ছিলনা। ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় চূড়ান্ত সফলতা অর্জন করলো ওই কৃষকের কন্যা।





ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে জীবনধারণের জন্য মৌলিক চাহিদার যথেষ্ট অভাব থাকার কারণে, নিজেদের ইচ্ছা শখ আহ্লাদ পূরণ করতে অধিকাংশ মানুষ ব্যর্থ হয়। অনেকে জীবন সংগ্রামে সাফল্য অর্জনে ভর্তি হয় এবং সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছায়। আবার অনেকেই প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে পিছিয়ে পড়তে বাধ্য হয়। দারিদ্রতা বাঁধা হয়ে দাঁড়ালেও সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে আটকাতে পারেনি কৃষক কন্যা এনিস কানমণি জয়কে।





ইউপিএসসি একটি অন্যতম কঠিন প্রবেশিকা পরীক্ষা। দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টায় জাতীয় ভাবে ৬৫ তম স্থান অধিকার করে সে। তার বাবা গ্রামে বসবাসকারী একজন দরিদ্র কৃষক এবং তার মা তাদের কৃষি জমিতে দিন মজুরের কাজ করে। শৈশবকাল থেকে জয় অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে মানুষ। তবুও মেধাবী ছিল। ছোট থেকেই মনের ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হবে।





সে তার কেরালার এসএসএলসি পরীক্ষাটি তার গ্রাম থেকে পাশ করে। দ্বাদশ শ্রেণিতে পাশ করে এরনাকুলাম জেলা থেকে। স্কুল শেষ করার পরে, তিনি তার এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশ নেয় । এই পরীক্ষায় সফল হতে পারেনি সে। এরপর বিএসসি তে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে সে। এরপর নার্সিং কোর্সে ভর্তি হয়ে নার্সিং ট্রেনিং সম্পন্ন করে একজন নার্স হয়েছে।





তবে নার্সের চাকরি নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারেনি জয়। নিজের জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে এবং অন্যদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ভিন্ন ধরনের কিছু করার চেষ্টায় সংকল্প গ্রহণ করে সে। ভাগ্য তার সহায় ছিল তার সাথে ছিল অদম্য সাহস আর মনের ইচ্ছা। ট্রেনে বেড়াতে যাওয়ার সময় দুই ব্যক্তির কথোপকথনের মাধ্যমে সে ইউ পি এস সি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা সম্পর্কে জানতে পারে।





আইএএস পরীক্ষা সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিবরণ জানতে পেরে জয় নিজের জীবন উৎসর্গ করলো যথাযথভাবে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য তৈরি হতে। পরিবারের অভাবের কারণে বই কিনতে সক্ষম ছিল না সে। তাই সংবাদ পত্র সংগ্রহ করত। সংবাদপত্র দেখে পড়াশোনা করার পাশাপাশি সম্পাদকীয় পৃষ্ঠা পড়তে সবথেকে বেশি পছন্দ করতো জয়।





কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর ব্যাপারে বিশেষ নজর ছিল তার। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় ৫৮০ তম স্থান অধিকার করে হতাশ হয়েছে সে। পরীক্ষার নাম্বার মনের মতো হয়নি সেই বার। কিন্তু পরে ভর্তি পরীক্ষায় তার সাফল্য আটকাতে পারেনি কেউ, ৬৫তম স্থান হল তার। দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ এর মাধ্যমে সবকিছু সম্ভব তা আবার প্রমাণ করল কেরলের এক কৃষক পরিবারের কৃতিসন্তান এনিস কানমণি জয়।





আজ কৃষকের এই কৃতি কন্যা সন্তান প্রমাণ করে দিল যে মেয়ে বলে আজ নারী শক্তি বা নারী দের সমাজে যে অবহেলা বঞ্চনা আজও করা হয় সমাজের সেইসব অত্যাচারিত নিপীড়িত ক্ষমতাশালী লোকগুলোর মুখে আজ সে এক প্রকার আরো একবার ঝামা ঘষে দিল। কঠিন পরিশ্রম নিজের প্রচেষ্টা ও একাগ্রতায় আজ তার সফলতা প্রধান চাবিকাঠি।





বন্ধুরা আপনাদেরকে আমরা এটাই বলব যে জীবনে যতই কঠিন পরিস্থিতি আসুক সে আজ করোনা বা অন্যকোন মহামারী যাইহোক আমরা একদিন এই পরিস্থিতি বা কঠিন সময় কাটিয়ে ঠিক উঠব। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য থেকে সরে গেলে হবে না। কঠোর পরিশ্রম একাগ্রতা ও শৃঙ্খলা পরায়ন এর মাধ্যমেই আসবে জীবনের সফলতা। কোন কিছুকে ভয় না পেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবনের দিকে এগিয়ে চলুন এবং লড়াই করতে থাকুন। আপনি একদিন ঠিক জয়ী হবেন।সত্য ঘটনা অবলম্বনে এই প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকেও মনোবল বাড়াতে সাহায্য করুন।




